ইন্টারনেটে যে সমস্ত কার্যক্রম কখনোই করা যাবে না

ইন্টারনেট হল এমন একটি জায়গা যেখানে মুহূর্তেই যে কোন কিছু ভাইরাল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এবং একই সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে যে কেউ জনপ্রিয়তার বৃদ্বি পেতে পারে এবং একই সাথে জনপ্রিয়তা থেকে নেমে যেতে পারে।

সেজন্য অনলাইন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয়। অর্থাৎ অনলাইন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হয়।

আর আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, এরকম কিছু কাজ সম্পর্কে যেগুলো অনলাইনে কখনোই করা যাবে না। অর্থাৎ এ সমস্ত কাজ যদি আপনি অনলাইনে করেন তাহলে সেটি আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

কি সেই সমস্ত কাজ যা অনলাইনে করা যাবেনা?

যে সমস্ত কাজ অনলাইনে করা কখনই উচিত নয়, সেগুলো সম্পর্কে যে তথ্য রয়েছে সেটি নিচে তুলে ধরা হলো।

  • ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা।
  • দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা।
  • অজানা উৎস থেকে ফাইল ডাউনলোড না করা।
  • অনিরাপদ ওয়েব সাইটে লেনদেন না করা।
  • অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা কিংবা হিংসা না চড়ানো।
  • অন্যদের ডাটা চুরি না করা।
  • অনলাইনে প্রতারণা শিকার না হওয়া। ইত্যাদি।

উপরে যে সমস্ত বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো অনলাইনে করা উচিত নয়। এবার তাহলে এই সম্পর্কে ডিটেইল আলোচনা করা যাক।

ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা

ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আমাদেরকে যে বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হয় সেটি হল ব্যক্তিগত তথ্যের দিকে নজর দেয়া। অর্থাৎ অনলাইনে কখনোই ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা উচিত নয়।

আমাদের মধ্যে এরকম অনেকে রয়েছেন যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় তাদের ব্যক্তিগত যে সমস্ত ইনফরমেশন রয়েছে সেগুলো ইন্টারনেটে শেয়ার করে ফেলেন। যেমন সে সমস্ত ব্যক্তি কোথায় কি করছেন, কখন কি খাচ্ছেন, কখন কার সাথে দেখা করছেন, সহ তাদের যাবতীয় পার্সোনাল বিষয়ে ইন্টারনেটে শেয়ার করে ফেলেন।

এ বিষয়টি আপনার জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেজন্য আপনার জন্য কখনোই উচিত হবে না ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা। কারণ আপনি যদি ইন্টারনেটের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে ফেলেন তাহলে সেটি আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা

ইন্টারনেটে যে কোন একটি প্ল্যাটফর্মে যখন আপনি একটি একাউন্ট তৈরি করেন তখন সেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে একাউন্টের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিতে হয়।

সেক্ষেত্রে একাউন্টের জন্য এবং পাসওয়ার্ড দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা নানা রকমের ভুল করে থাকি। এর মধ্যে থেকে অন্যতম একটি ভুল হলো অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।

কোন কোন একাউন্ট এরকম থাকে যে সেই সমস্ত একাউন্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড ব্যবহৃত করা হয়। এবার কেউ যদি আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে যায় তাহলে সেই ব্যক্তি খুব সহজেই আপনার একাউন্টের এক্সেস নিয়ে নিতে পারে।

সেজন্য অবশ্যই, নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে পাসওয়ার্ড শক্তিশালী করে দিতে হবে। একাউন্টে কখনোই দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা যাবে না।

অজানা উৎস থেকে ফাইল ডাউনলোড না করা

ইন্টারনেটে ও নিরাপদ যে সমস্ত কার্যক্রম রয়েছে সেগুলোর মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য হলো যে কোন সোর্স থেকে ইনফরমেশন ডাউনলোড করে নেয়া। অর্থাৎ আপনার যে ফাইলটি ডাউনলোড করার প্রয়োজন সেই ফাইলটি আপনি যে কোন অজানা সোর্স থেকে ডাউনলোড করে নেবেন না।

অজানা সোর্স থেকে আপনি যদি কোন একটি ফাইল ডাউনলোড করে নেন তাহলে তার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে ভাইরাসের আক্রমণ হতে পারে। এবং যদি আপনার device কোন সময় ভাইরাস আক্রান্ত হয় তাহলে আপনার প্রয়োজনীয় যে সমস্ত ইনফরমেশন রয়েছে সেগুলো চুরি হয়ে যেতে পারে।

সেজন্য যে সমস্ত অজানা হয়েছে সে সমস্ত অজানা সব থেকে কখনোই কোন ফাইল ডাউনলোড করবেন না। কারণ এতে বিপদ থেকে আনতে পারে।

এছাড়া যেমস্ত সাইটে https এর বদলৌতে http থাকে, সেগুলা এড়িয়ে চলা উচিত।

অনিরাপদ ওয়েব সাইটে লেনদেন না করা

এছাড়া আপনি যদি ইন্টারনেটের লেনদেন করেন তাহলে ইন্টারনেটে লেনদেন করার ক্ষেত্রে আপনাকে অনিরাপদ ওয়েবসাইট এড়িয়ে চলতে হবে। ইন্টারনেটে যে সমস্ত অনিরাপদ ওয়েবসাইট রয়েছে সে সমস্ত ওয়েবসাইট এড়িয়ে চলার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

এছাড়া লেনদেন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং যে সমস্ত ওয়েবসাইট নিরাপদ মনে না হবে সে সমস্ত ওয়েবসাইট এড়িয়ে চলতে হবে।

অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা কিংবা হিংসা না চড়ানো

আমাদের মধ্যে এরকম অনেকে রয়েছেন যারা কিনা অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা কিংবা হিংসা চড়ানোর কাজ করে থাকেন। আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তাহলে সেটি আপনার পুরো জীবনের জন্য বিপদ থেকে আনতে পারে।

ইন্টারনেটকে কখনো বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা কিংবা বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয়ে হিংসা ছড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনাকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে ভালো কাজে।

কারণ আপনি যদি ইন্টারনেটকে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা দিয়ে ভরে ফেলেন তাহলে যাদের বিরুদ্ধে আপনি এসমস্ত কাজ করছেন তারা আপনার শত্রুতে পরিণত হবে। এবং এটি আপনার জন্য খারাপ প্রভাব বয়ে আনতে পারে।

সেজন্য, সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন ইন্টারনেটে যেকোনো বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা এড়িয়ে চলার এবং যেকোন রকমের সংঘাত এড়িয়ে চলার।

অন্যদের ডাটা চুরি না করা

আমাদের মধ্যে এরকম অনেকেই রয়েছেন যারা ইন্টারনেটে হ্যাকিং এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন এবং এই সমস্ত কাজ তারা মানুষকে বলে সম্পূর্ণ করে থাকেন। আপনি নিজেও জানেন না এই কাজটি আপনার জন্য কতটা ভয়ানক হতে পারে।

কারণ প্রতিটি দেশে সাইবার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিদ্যমান রয়েছে। যার মাধ্যমে ইন্টারনেটে যদি কেউ হ্যারেজমেন্টের শিকার হয়ে থাকে তাহলে তারা তাদের ন্যায্য আদায় করে নিতে পারে।

এবার আপনি যদি যে কারো ডাটা চুরি করেন এবং তার পরে সেই ব্যক্তি হুমকি দেন তাহলে সেটি আপনার জন্য বিপদ থেকে আনতে পারে। এতে করে আপনি যে ব্যক্তিকে হুমকি দিচ্ছেন সেই ব্যক্তি আপনার নামে সাইবার অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করতে পারে এবং এতে আপনার জেল জরিমানা হতে পারে।

অনলাইনে প্রতারণা শিকার না হওয়া

ইন্টারনেটে যখন আপনি যে কারো সাথে লেনদেন করবেন কিংবা অন্য যেকোন রকমের কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন তখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, যার সাথে লেনদেন করছেন তার কাছ থেকে কোন রকমের প্রতারণা শিকার না হওয়ার।

কারণ ইন্টারনেট ভালো মানুষের যেভাবে ভরপুর ঠিক ঐরকম ভাবে প্রতারকেরও ভরপুর। সেজন্য ইন্টারনেট থেকে কোন রকমের জিনিস ক্রয় করার পূর্বে তাদের ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন এবং পূর্বে তাদের কাছ থেকে কেউ ক্রয় করেছে কিনা সেই সম্পর্কে অবগত হয়ে যাবেন।

যদি পূর্বে কাস্টমারের ভালো ফিডব্যাক থেকে থাকেন, তাহলে আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে পন্য ক্রয় করতে পারেন। এবং যদি কোন রকমের অযাচিত বিষয় দেখতে পান তাহলে তাদেরকে বয়কট করার চেষ্টা করবেন।

কারণ ইন্টারনেটে আপনার ভুল পদক্ষেপ প্রতারণা শিকার করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।

শেষ কথা: ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। কারণ এই ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে অনেকেই যেভাবে কোটিপতি হয়েছেন ঠিক একই রকম ভাবে এরকম অনেক নজির রয়েছে যারা কিনা গরিব হয়েছেন।

ইন্টারনেটে আপনি সবসময়, কি শেয়ার করছেন কখন কি করছেন সেই দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। এবং আর যাই করুন না কেন ইন্টারনেটে কখনো প্রয়োজনীয় এবং পারসোনাল কোন ইনফরমেশন শেয়ার করবেন না। কারণ এটি আপনার জন্য ভয়াবহ বিপদের কারণ হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top